মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকালে সদর উপজেলার ছাদেকপুর ইউনিয়নের কাঁচা রাস্তার পাশ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত কিশোরীরা হলো: সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিসিমা গ্রামের বেলাল মিয়ার মেয়ে নাইমা আক্তার (১৩) ও সাদেকপুর ইউনিয়নের উত্তর পাড়া গ্রামের আব্দুল বারেক মিয়ার মেয়ে মাইমুনা আক্তার (১৫)। তারা দু’জন স্থানীয় ময়না বেগম ইসলামিয়া হাফিজিয়া মহিলা মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তারা মাদ্রাসায় থাকতেন।
পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল থেকে ময়না বেগম ইসলামিয়া হাফিজিয়া মহিলা মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থী নাইমা আক্তার ও মাইমুনা আক্তার নিখোঁজ হয়। এরপর থেকে তাদের কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি কালে মাদ্রাসার শিক্ষক মো. জুনায়েদ তাদের কাছে অসংলগ্ন কথা বলে আসছেন। পরে মঙ্গলবার সকালে মাদ্রাসা থেকে কিছু দূরে ছাদেকপুর ইউনিয়নের কাঁচা রাস্তার পাশ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের সদস্যরা মাদ্রাসা শিক্ষক জুনায়েদকেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন বলে সন্দেহ করছেন।
নিহত মাইমুনার বাবা আব্দুল বারিক জানান, মাদ্রাসার শিক্ষক একেক সময় একেক কথা বলছেন, তার কথার কোনো কিছু সঠিক পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
তার ভাই আব্দুল কাইয়ূম জানান, আমরা মাদ্রাসার শিক্ষকেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ করছি। কারণ তিনি একবার বলছেন, দুষ্টামির জন্যে তিনি তাদের শাসন করেছেন। মাদ্রাসার সিসিটিভি ফুটেজ নিয়েও তিনি তাল বাহানা করছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন জানান, দুই মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ২৪ আগস্ট (শনিবার) রাত থেকে নিখোঁজ হয়। পরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পরিবারের সদস্যদের খবর দেন। পরিবারের সদস্যসহ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজিও করেন। সকালে সাদেকপুর রাস্তার পাশে দুজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের আগেই পরিবারের সদস্যরা তাদেরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। তবে তাদের মৃত্যুর কারণ এখনই বলা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে হত্যার কারণ সম্পর্কে জানা যাবে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক গা-ঢাকা দিয়েছেন।
নিহতদের মরদেহ জেলা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি মো. মোজাফফর হোসেন।